Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

শিরোনাম
☔ বর্ষাকাল ও বন্যা মৌসুমে চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনা 🦐
বিস্তারিত

☔ বর্ষাকাল ও বন্যা মৌসুমে চিংড়ি চাষ ব্যবস্থাপনা 🦐
বর্ষাকালে বন্যার কারণে আবহাওয়ার দ্রুত পরিবর্তন চিংড়ি চাষে প্রতিকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। দিনের তাপমাত্রার ওঠানামা ও বজ্রঝড় পানির গুণমানে হঠাৎ পরিবর্তন এনে চিংড়িকে শকে ফেলে ও রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ায়।
১। পরিবেশগত পরিবর্তন ও দূষণজনিত প্রভাব:
• পানির তাপমাত্রা হঠাৎ কমে যাওয়া
• বৃষ্টির পানি অ্যাসিডিক হওয়া ও পাড় থেকে অ্যালুম ধুয়ে পিএইচ কমে যাওয়া
• লবণাক্ত পানিতে হঠাৎ লবণমাত্রা হ্রাস
• পানিতে দ্রবীভূত অক্সিজেন কমে যাওয়া
• পানির ক্ষারত্ব হ্রাস
• বৃষ্টির পানি ও বন্যার পানি দ্বারা ক্ষেত, বাগান ও আবাসিক এলাকা থেকে রাসায়নিক বা বিষাক্ত পদার্থ পুকুরে প্রবেশ
২। পুকুর বা খাঁচা ক্ষতির কারণ:
• পানির স্তর বেড়ে পুকুর উপচে পড়া
• ঘূর্ণিঝড়, প্রবল বাতাস ও ঢেউয়ে খাঁচা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া

করণীয়:
🔹 ১। সেডিমেন্টেশন ও পানি শোধন:
• পাম্প দিয়ে পানি তোলার আগে সেডিমেন্টেশন পুকুর রাখা আবশ্যক
• সেডিমেন্টেশন পুকুর হবে মূল পুকুরের ১/৩ থেকে ১/২ আয়তনের
• চাষের মৌসুমে চাষের পুকুর ও সেডিমেন্টেশন পুকুর অদলবদল করা যাবে
• পর্যাপ্ত পানি সংরক্ষণ করুন
• খুব অল্প পানির স্তরে চাষ নয়

🔹 ২। অক্সিজেন ও অ্যারেশন ব্যবস্থাপনা:
• প্রতি ২,৮০০ চিংড়ির জন্য একটি অ্যারেটর
• অ্যারেটর যেন পানির ঘূর্ণন পুকুরের মাঝখানে করে
• ঘূর্ণনের গতি: ৮০–৮৫ rpm
• ৫–১০ কেজি স্যাপোনিন ছিটিয়ে পরীক্ষা করুন—ফেনা মাঝখানে জমলে সঠিক
• তলদেশে প্লাস্টিক টিউব বা পিউমিস পাথর দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ করুন

🔹 ৩। পানি পরীক্ষা ও চুন প্রয়োগ:
• pH রাখুন ৭.৫–৮.৫ এর মধ্যে
• বৃষ্টির আগে শুকনো চুন প্রয়োগ করুন (১০ কেজি/১০০ মি²)
• বৃষ্টির পরে ১০–২০ কেজি চুন/হেক্টর
• অ্যারেটর দিয়ে পানির স্তরভেদ প্রতিরোধ

🔹 ৪। ক্ষারত্ব বৃদ্ধির পদ্ধতি:
• ব্ল্যাক টাইগার প্রন: ৯০–১৩০ ppm
• হোয়াইটলেগ শ্রিম্প: ১০০–১৫০ ppm
• ডলোমাইট চুন ২৪ ঘণ্টা ভিজিয়ে রাতে (৮–১০টা) ছিটান
• একবারে ১০ mg/l এর বেশি বৃদ্ধি নয়
• না বাড়লে ৭০% সোডা লাইম + ৩০% ডলোমাইট চুন মিশিয়ে দিন

🔹 ৫। লবণমাত্রা <৮ ppt হলে শৈবাল নিয়ন্ত্রণ:
• ব্লু-গ্রিন শৈবাল বাড়ে → pH ওঠানামা, অক্সিজেন স্বল্পতা, গিল রোগ
• খাদ্য কমিয়ে দিন
• ০.৫ ppm BKC ৮০০ (পুকুরের ১/৩ অংশে, বাতাসের বিপরীত পাশে, অ্যারেটর ছাড়া জায়গায়)
• শৈবালের ফেনা পরিষ্কার করুন
• প্রয়োজনে ২–৩ বার পুনরাবৃত্তি করুন
• প্রোবায়োটিক + জিওলাইট ব্যবহার করুন

🔹 ৬। ঘোলাটে পানি ব্যবস্থাপনা:
• ঘোলাভাবের কারণে ফটোসিনথেসিস কমে, অক্সিজেন হ্রাস
• গিলে কাদা জমে গিল ফুলে যায় বা হলুদ হয়
• পানি পরিবর্তন বাড়িয়ে প্রোবায়োটিক ব্যবহার করুন

🔹 ৭। বিষাক্ত গ্যাস (NH₃, H₂S, CH₄) নিয়ন্ত্রণ:
• অতিরিক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন
• শেষ মাসে বারবার পানি পরিবর্তনের জন্য ট্রিটমেন্ট পুকুর ব্যবহার করুন
• নিয়মিত প্রোবায়োটিক ব্যবহার করুন
• তলদেশ সাইফন করুন
• অ্যারেশন সিস্টেম বাড়ান
• pH ৭.৮–৮.২ এর মধ্যে রাখুন
• নিয়মিত NH₃, H₂S ও NO₂⁻ পরীক্ষা করুন

🔹 ৮। বৃষ্টির পরে চিংড়ি ও পরিবেশ পরীক্ষা:
• চিংড়ির রঙ, গাট, প্রতিফলন, পেট পরীক্ষা করুন
• pH, ক্ষারত্ব, ঘোলাভাব ও লবণমাত্রা পরিমাপ করুন

🔹 ৯। খাদ্য ব্যবস্থাপনা:
• আকাশ মেঘলা বা বৃষ্টি হলে খাবার কমিয়ে দিন বা বন্ধ করুন
• বৃষ্টির পর ৩০–৫০% কম খাবার দিন
• প্রতিদিন খাদ্যের সাথে ভিটামিন C, খনিজ ও সিনথেটিক ভিটামিন দিন

ছবি
ডাউনলোড
প্রকাশের তারিখ
09/07/2025
আর্কাইভ তারিখ
17/03/2028